উঠতি বয়সের মেয়েদের খতনা দেওয়ার চল রয়েছে আফ্রিকার দেশগুলোতে। কেনিয়া এদের অন্যতম। মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে খতনা করানো সেখানকার একটা পুরনো রেওয়াজ। রয়টার্সের এক ফটোসাংবাদিকের ক্যামেরায় সম্প্রতি কেনিয়ার পাকট সম্প্রদায়ের মেয়েদের খতনা দেওয়ার করুণ চিত্র উঠে এসেছে। দেশটিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে এ খতনা নিতে হয় মেয়েদের। এ সময় তাদের পরানো হয় প্রাণীর চামড়া। এর পর প্রত্যন্ত অঞ্চলের বড় পাথরখণ্ডের ওপর তাকে আলাদা করে রাখা হয়। কয়েক দিন বন্ধ রাখা হয় খাবার-দাবার।
তিন বছর আগে মেয়েদের খতনাকে বর্বরতার অন্যতম মাধ্যম উল্লেখ তা অবৈধ ঘোষণা করে সে দেশের সরকার। কিন্তু এখনো বিভিন্ন উপজাতীয় গোষ্ঠীর মধ্যে এর প্রচলন ব্যাপক। আইনের চেয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে বেশি গুরুত্ব দেয় তারা। এছাড়া যৌনমিলনে সক্ষম কি না, বিয়ের আগে তা নিশ্চিত করতেই মূলত খতনা দেওয়া হয়। খতনার আগে তাদের সাজানো হয়। দুধ দিয়ে গোসল করানোসহ মানা হয় নানা পারিবারিক ও সামাজিক ঐতিহ্য।
সরকারের বিধিনিষেধ থাকার পরও কেনিয়ার এক-তৃতীয়াংশ নারীকে এ খতনার মতো অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। পিতামাতা এটাকে তাদের ঐতিহ্য হিসেবে দেখেন।
খতনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া এক বাবা বললেন, ‘এটা আমাদের সংস্কৃতি। মেয়ে বিয়ে দেওয়ার উপযুক্ত কি না, তা পরীক্ষা করতে এটা করা হয়।’
খতনার আগের দিন বাড়িতে বিভিন্ন রঙে সাজানো হয়। চলে মেয়েদের নাচ ও গানের আসর। রঙের হোলি খেলায় মেতে ওঠেন তারা।
কেনিয়ার পাকট সম্প্রদায়ে এটা বেশ প্রচলন। খতনা অনুষ্ঠানে আগত ওই সম্প্রদায়ের এক মা বলেন, ‘মেয়ে কতটুকু শক্তিশালী তা প্রমাণের মাধ্যম এটি। এ কাজ আমার মেয়ে করছে বলে আমি খুবই আনন্দিত।’
ইউনিসেফের মতে, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ২৯টি দেশে এ খতনা দেওয়ার চল রয়েছে। প্রতিবছর এ প্রাণঘাতী খতনার সময় প্রচুর রক্তক্ষরণে মারা যায় অনেক নারী।তার পরও ঐতিহ্য রক্ষার নামে এ কঠিন অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হচ্ছে মেয়েদের। তথ্যসূত্র : ডেইল মেইল।